Ad Code

Responsive Advertisement

আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ - ফ্রিল্যান্সিং টিউটোরিয়ালস(freelancing Tutorials) - শেষ পর্ব


আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ - ফ্রিল্যান্সিং টিউটোরিয়ালস(freelancing Tutorials) - শেষ পর্ব

আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ

বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি মার্কেটপ্লেস হলো Odesk.com, Freelancer.com, Elance.com। এই তিনটি সাইটেই খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

আউটসোর্সিংয়ের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ওডেস্ক। ফ্রিল্যান্সিং-এর সবচেয়ে বড় এই মার্কেটপ্লেসে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৩য়। বর্তমানে ৭০০০ সক্রিয় বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সার রয়েছে ওডেস্কে এবং বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই কারণে ওডেস্কের উদ্যোগে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘কনট্রাক্টরস অ্যাপ্রিপ্রিয়েশন ডে (২০১২) এবং ওডেস্কের পক্ষ থেকে কয়েক দফা বাংলাদেশে সফরে এসেছেন ওডেস্কের শীর্ষস্থানীয় সব কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে ওডেস্কের মোট কাজের ২ শতাংশ করতেন বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা। ২০১২ সাল নাগাদ যা গিয়ে দাঁড়ায় ১২ শতাংশে। ২০১২ সালের প্রান্তিকে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা ওডেস্কে ৭ লাখ ২০ হাজার ঘন্টা কাজ করেছেন।

ফ্রিল্যান্সার ডটকমে ২৫ হাজারের বেশি নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছে বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় জনপ্রিয় সাইট ফ্রিল্যান্সার ডটকমেও বাংলাদেশিদের অবস্থান সন্তোষজনক। এ সাইটটিতে বাংলাদেশিরা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের কাজই বেশি করে থাকেন। সর্বশেষ স্ত্রিপ্টল্যান্সডটকম সাইটটি ফ্রিল্যান্সার কর্তৃক কিনে নেয়ায় বাংলাদেশি অনেক প্রোগ্রামার এখন ফ্রিল্যান্সার ডটকমে কাজ শুরু করেছেন।

অপর জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস ইল্যান্সেও প্রথম সারিতে রয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে ইল্যান্স কর্তৃপক্ষ কন্ট্রাক্টর বাই জিওগ্রাফি ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ২৫টি দেশের নাম প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের নাম। শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। প্রকাশিত তথ্যমতে, সাইটটিতে বর্তমানে বাংলাদেশি নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার ৩৯ হাজার ১৯৫ (৬ এপ্রিল ২০১৩ সাল পর্যন্ত)। এখানে বাংলাদেশিদের প্রতি ঘন্টায় গড় কাজের মূল্য ৯ ডলার। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সাররা এই সাইট থেকে ৪৯ লাখ ইউএস ডলার আয় করেছে।

বাংলাদেশিরা মূলত Data Entry এবং SEO/SEM/SMM-এর কাজ বেশি হয়। এছাড়া Web Development, Software Development, Writing & Content, Design, এবং Multimedia & Architecture সহ অন্যান্য কাজের পরিমাণ কম না। ওয়েব ডেবেলপমেন্ট বা সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত প্রকল্পে ব্যয় বেশি। এধরণের কাজগুলোতে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। দেখা যায় বাংলাদেশি একজন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজার যেখানে প্রতি ঘন্টার জন্য ৩ থেকে ৫ ডলার মূল্যে কাজ করেন সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একজন ওয়েব ডেভেলপার প্রতি ঘন্টার জন্য ৩০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করে থাকেন। কেবল তাঁর দক্ষতার কারণেই এত বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি চার্জ করতে পারছেন। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি ফ্রিল্যান্সারদের আরো দক্ষতা অর্জন করা দরকার।



বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ফিল্যান্সিং এর অবদান

আমদানী নির্ভর আমাদের এ দেশে যত বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের প্রয়োজন হয় তার একটি বড় অংশ আসে প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে। ২০১২ সালে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশের শ্রমিকেরা প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছেন (তথ্যসুত্রঃ ওর্য়াল্ড ব্যংক)। প্রতিবছর ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে এটা ধরে নিলে ২০১৫ সাল নাগাদ সেটা হবে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ইউএস ডলারের কাছাকাছি।

এবার আসা যাক আউটসোর্সিং শিল্পের দিকে। ২০১২ সালে ৩৬৫ কোটি টাকারও বেশি আয় করেছেন বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা। ২০১৫ সালে সর্বমোট ৪৪৩ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণের কাজ আউটসোর্স হবে। আমরা যদি এর ১০% মার্কেট শেয়ার নিতে পারি তাহলে সেটা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং ৫% মার্কেট শেয়ার নিলে সেটা হবে প্রায় ২৩ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যা কিনা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বর্তমানের সবচেয়ে বড় খাতকেও অতিক্রম করবে।

আমাদের দেশে প্রায় ৫০ শতাংশই মহিলা। আর এ মহিলাদের একটা বিশাল অংশ জাতীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলে- এমন কাজ খুব কমই করেন। কিন্তু তাদের একটা বড় অংশ চাইলে বাসায় বসে প্রতিদিন ৩-৪ ঘন্টা সময় দিলে প্রতি ঘন্টা ১ ডলার হিসাবে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩-৪ ডলারও ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারেন। মোট কর্মক্ষম লোকের সংখ্যা যদি ৭ কোটি হয় তাহলে নারী আছে ৩.৫ কোটি। এর মধ্যে শিক্ষিত তরুণী এবং মহিলা যদি অর্ধ কোটিও হয় এবং তাঁদেরকে ফ্রিল্যান্সার হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব হয় তবে প্রতিদিন ১.৫ কোটি ডলার আয় আসবে এ ক্ষেত্র থেকে। বছরে এ আয়ের পরিমাণ দাড়াবে ৫০০ কোটি ডলারে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ