মগজ কিভাবে করে যখন আমরা কথা বলি!!!
how does brain work while talking |
মানুষের স্ট্রোক, মৃগীরোগ এবং মস্তিষ্কের আঘাতজনিত কারণে বাকশক্তি হারানো মানুষের রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় এই আবিষ্কার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সাধারণত মনে করা হতো যে, মানুষ কথা বলার সময় মস্তিষ্কের একটি অংশ ‘কমান্ড সেন্টার’ হিসেবে কাজ করে থাকে। তবে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণার পর দাবি করেছেন যে, আমরা যখন কথা বলি তখন মস্তিষ্কের এই অংশটি মূলত কোনোই কাজ করে না। ফলে বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কারের ফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে স্ট্রোক, মৃগীরোগ এবং মস্তিষ্কের আঘাতজনিত কারণে বাকশক্তি হারানো মানুষের রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় ।
১৯ শতকের দিকে মস্তিষ্কের ওই অংশটিকে কথা বলার জন্য মানুষের ‘কমান্ড সেন্টার’ হিসেবে চিহ্নিত করেন ফরাসি চিকিৎসাবিজ্ঞানী পিয়েরে পল ব্রোকা । দুনিয়াজোড়া বিজ্ঞানীরা এতদিন ধরে তাঁর নামেই ‘ব্রোকা এরিয়া’ হিসেবে এই অংশটিকে মানুষের বাচনিক এবং স্বরযন্ত্রের ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে স্বীকৃতি দিয়ে আসছেন। কিন্তু সম্প্রতি এই গবেষণার ফলে ভিন্ন তথ্য উঠে আসছে।
দীর্ঘদিনের এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বেকারলি ও মেরিল্যান্ডের জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা । আর এই যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনটির প্রধান রচয়িতা আডিন ফ্লিঙ্কার বলেছেন, ‘আক্ষরিক অর্থেই কথাটা বলার সময় ব্রোকা এরিয়া কোনো কাজ করে না। কিন্তু একটা আলাপ চলাকালে এটা হয়তো পরবর্তী শব্দ বা বাক্য সাজানোর কাজ করতে পারে।’
ঐতিহ্যগতভাবে মস্তিষ্কের ভাষাকেন্দ্রটিকে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করেন— জথা একটিকে কথার অর্থ বোঝার জন্য, অন্যটিকে কথাটা উৎপাদনের জন্য। ফ্লিঙ্কার নামের স্নায়ুবিজ্ঞানীরা আরো বলেন যে, ‘এই আবিষ্কারের ফলে আমরা জানতে পারলাম যে ব্রোকা এরিয়া আসলে কথা উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং এটা মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের মধ্যে তথ্য সন্নিবেশ ও সমন্বয়ের এক জটিল জায়গা।’
এই আবিষ্কারের ফলে ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে স্ট্রোক, মৃগীরোগ এবং মস্তিষ্কের আঘাতজনিত কারণে বাকশক্তি হারানো মানুষের রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায়। এক্ষেত্রে ফ্লিঙ্কার বলেন যে, এই গবেষণার ফলে মূলত সহায়ক হতে পারে আমাদের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের সময় ভাষাগত প্রতিবন্ধিতার সমস্যা নির্ণয়ে ।
আর গবেষণার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এ।
0 মন্তব্যসমূহ
এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।
Emoji