Ad Code

Responsive Advertisement

অদ্ভুত সব টাস্কিত আবিষ্কার

প্রতিনিয়ত মানব সভ্যতাকে নতুন নতুন গবেষণা আর আবিষ্কার দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞানীদের বেশিরভাগ গবেষণার বিষয়বস্তু আর ফলাফল বেশ গুরুগম্ভীর হলেও মাঝে মধ্যে আবিষ্কারটি এতোই অদ্ভূত হয় যে, স্বয়ং বিজ্ঞানীরাও অবাক হয়ে যান। লাইভ সায়েন্স অবলম্বনে ২০১২ সালের এমন অদ্ভূত ১০টি বৈজ্ঞানিক ঘটনা আর আবিষ্কার নিয়ে আজকের বিশেষ আয়োজন। 

অদ্ভুত সব টাস্কিত আবিষ্কার

ডিএনএর মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি

বংশগতির ধারক ও বাহক ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক অ্যাসিড (ডিএনএ) স্থানান্তরের মাধ্যমে প্রজনন ছাড়াই বংশবৃদ্ধি করে বিডিলয়েড রোটিফার ওয়ার্ম নামের একজাতের বিশেষ কেঁচো। প্রজনন ছাড়াই বংশবৃদ্ধি করতে পারে, প্রাণীজগতে এমন উদাহরণ একেবারেই হাতে গোনা। যৌনক্রিয়ার মাধ্যমে একদিকে বাড়ে জিন বৈচিত্র, তেমনি প্রতিরোধ হয় ক্ষতিকারক জিন বিবর্তন। কিন্তু কোনো রকমের যৌনক্রিয়া ছাড়াই ৮ কোটি বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে বিডিলয়েড রোটিফার ওয়ার্ম নামের একজাতের বিশেষ কেঁচো। এজাতের কেঁচোগুলোর মধ্যে পুরুষ কোনো কেঁচো নেই, বরং সবগুলোই স্ত্রী লিঙ্গের। খাবার হিসেবে এদের পছন্দ বিভিন্ন ফাংগাস আর ব্যাকটেরিয়া। ফাংগাস আর ব্যাকটেরিয়া ডিএনএ নিয়ে নিজের জেনেটিক কোডে মিশিয়ে নেয় রোটিফার ওয়ার্ম। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ওই ডিএনএর অ্যান্টিওক্সিডেন্টের কারণেই টিকে রয়েছে রোটিফার ওয়ার্ম।


রঙিন মধু

হঠাৎ করে নীল আর সবুজ রঙের মধু তৈরি করা শুরু করে ফরাসী মধুচাষীদের বেশ ভড়কে দিয়েছিলো মৌমাছিরা। এই রঙিন মধু তৈরির কারণটি ছিলো আরো অদ্ভুত, মৌমাছিদের চকলেট আসক্তি! ফুলের নির্জাস সংগ্রহ করা বাদ দিয়ে চকলেট ফ্যাক্টরি আর বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের বর্জ্য থেকে চিনি সংগ্রহ করা শুরু করেছিলো মৌমাছিরা। যার ফলাফল, রঙিন মধু।


মায়ের মস্তিষ্কে শিশুর কোষ

২০১২ সালে যে আবিষ্কারগুলো বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বেশি অবাক করে দেয় তার একটি হলো মায়ের মস্তিষ্কে গর্ভের শিশুর কোষের উপস্থিতি। এমনকি গর্ভের শিশুটি ভূমিষ্ঠ হবার পরও কয়েক দশকেরও বেশি সময় মায়ের মস্তিষ্কে থেকে যায় ওই কোষগুলো। এমনকি ৯৪ বছর বয়সী এক মৃত নারীর মস্তিষ্কে তার সন্তানের কোষের উপস্থিতি খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। ওই কোষগুলো দীর্ঘদিন ধরে মায়ের মস্তিষ্কে থেকে কি করে সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত না হলেও, কোষগুলো গর্ভপরবর্তী অবস্থায় মায়ের শরীরের টিস্যুগুলোকে মেরামত করে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।


দীর্ঘায়ু হতে লিঙ্গচ্ছেদ

১৮৯৪ সালের আগ পর্যন্ত কোরিয়ান পুরুষদের মধ্যে চালু ছিলো স্বেচ্ছায় লিঙ্গচ্ছেদের একটি প্রথা। সামাজিক মর্জাদা বৃদ্ধি এবং রাজপ্রাসাদে অবাধ যাতায়াতের সুযোগ পেতে এই স্বেচ্ছা লিঙ্গচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে যেতেন তারা। সবচেয়ে অদ্ভূত ব্যপার হচ্ছে স্বাভাবিক পুরুষদের তুলনায় গড়ে ২০ বছর বেশি বাঁচতেন তারা। এর কারণ সম্পর্কে এখনও পরিষ্কার নন বিজ্ঞানীরা। তবে পুরুষ সেক্স হরমোন টেস্টোস্টোরেনের অনুপস্থিতির কারণে এমনটা হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় টেস্টোস্টোরেন, এছাড়াও হৃদপিণ্ডকেও দুর্বল করে দেয় হরমোনটি।


ফিরে আসবে ফসিল ফরেস্ট

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির অপ্রত্যাশিত ফলাফল বলা চলে এটিকে। আর্কটিক অঞ্চলের পুরু বরফের নিচে ফসিলে পরিণত হয়ে চাপা পড়ে আছে প্রাচীন বন। উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে আর্কটিক বরফ গলে তার জায়গায় ফিরে আসতে পারে ২৫ লাখ বছরের ওই পুরণো বন।


জীবন বাঁচাতে তেলাপোকা

যে তেলাপোকা দেখে আপনি নাক শিটকান, সেই তেলাপোকাই বাঁচাতে পারে আপনার মূল্যবান জীবন। জীবন্ত তেলাপোকা ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন রিমোট কন্ট্রোলড সাইবর্গ ককরোচ। এই সাইবর্গ তেলাপোকার কাজ হবে ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকায় আহত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা।


ব্রিজ টু নোহোয়ার

ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতিটা কেবলমাত্র তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তি দিয়েই খুঁজে পাওয়া যায়। পৃথিবী থেকে ২৭০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে দু’টি গ্যালাক্সির মাঝে উপস্থিতি দানবীয় এক ডার্ক ম্যাটার ব্রিজের। ২০০১ সালে হাওয়াইয়ের সুবারু টেলিস্কোপ ডার্ক ম্যাটারের ব্রিজটির উপস্থিতি ধরা পড়লেও তখন ব্যাপারটি আমলে নেননি কেউ। কিন্তু এ বছর বিজ্ঞানীরা পুরোদমে গবেষণা করে রহস্যময় ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। যেখানে ডার্ক ম্যাটারের উপস্থিতি থাকে, সেখানে একাধিক গ্যালাক্সি জট বেঁধে থাকে, এ ত্বত্ত্বের স্বপক্ষে প্রমাণ এটি।


মৃতদেহ চিহ্নিত করবে ম্যাগোট
মানুষের মৃতদেহ খেয়ে শেষ করে ফেলা ম্যাগোট বা শূককিটের দেহ থেকেই জানা যাবে মৃতদেহের পরিচয়। সম্প্রতি মেক্সিকোর পুলিশ বিভাগের আবিষ্কৃত একটি মৃতদেহ আগুনে এতোটাই পুড়ে গিয়েছিলো যে, কোনোভাবেই মৃতদেহের পরিচয় নির্ধারণ করা সম্ভব ছিলো না। ওই মৃতদেহটিতে কয়েকটি শূককিট স্থাপন করেন বিজ্ঞানীরা। পরে ওই শূককিটগুলো থেকে পাওয়া মৃতদেহের ডিএনএ থেকে ওই ব্যক্তির পরিচয় নির্ধারণ করতে সক্ষম হন বিজ্ঞানীরা।


বেবি ক্রাইম ফাইটার

লন্ডনের অপরাধপ্রবণ এলাকা গ্রেভস্যান্ডের দোকানে লুট ঠেকাতে দোকানের সামনে ছোট্ট শিশুদের ছবি ঝোলাচ্ছেন স্থানীয় দোকানদাররা। তাদের আশা বাচ্চাদের ছবি দেখেই চুরি ডাকাতি ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে অপরাধীরা। ওই স্থানীয় দোকানদারদের এই পদক্ষেপ যে ভিত্তিহীন, তা কিন্তু নয়। সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন, শিশুদের মিষ্টি মুখটি মানুষের মস্তিষ্কের আদুরে অংশটিকে চালু করে দেয়।


নতুন মানব প্রজাতি

নিন্ডারথাল আর হবিটরা ছাড়াও আধুনিক মানুষের পাশাপাশি পৃথিবীতে অস্তিত্ব ছিলো আরো একটি মানব প্রজাতির। বিজ্ঞানীরা রেড ডিয়ার কেভ পিপল নামের মানুষের নতুন একটি প্রজাতির কঙ্কাল আবিষ্কার করেছেন দক্ষিণ পশ্চিম চীনে। পৃথিবীতে অদ্ভূত আকৃতির এই মানুষদের অস্তিত্ব ছিলো ১১ হাজার বছর আগে, বরফ যুগের শেষ দিকে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ