‘ড্রাকুলা’ উপন্যাস এর কথা শোনেননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। মৃত কাউন্ট ড্রাকুলা দিনের আলোতে কফিনের ভেতর নিথর হয়ে থাকলেও সূর্য ডুবার সাথে সাথে জেগে ওঠতেন তিনি। তারপর শিকারের খোঁজে। অবশেষে শিকার করতো কোনো মানুষের গলায় তীক্ষ্ণ দুটি দাঁত বসিয়ে রক্ত চুষে খাওয়া। আজগুবি মনে করলেও এটা সত্যি যে রোমানিয়ার ট্রান্সসিলভানিয়ার ব্রান দুর্গে ছিলেন এমন একজন মানুষ৷ যার নাম ছিল ভ্লাদের ক্লদ। প্রচণ্ড অত্যাচারী এই রাজকুমার নাকি সত্যি সত্যিই শত্রুদের রক্ত পান করতেন। এখন পিশাচ ড্রাকুলার ভয়ের দিন শেষ হয়েছে। তার সেই বাসগৃহ ব্রান দুর্গ এবার বিক্রি হতে চলেছে৷ ব্রাম স্টকারের এই পিশাচ কাউন্ট ড্রাকুলাকে নিয়ে যে কত ধরনের কত গল্প হয়েছে দেশে দেশে তার হিসাব নেই।
জানা যায়, ব্রাম স্টকারের কলমের জোরে অমরত্ব পাওয়া এই কাল্পনিক রক্তচোষা পিশাচের পূর্বপুরুষরা এই প্রাসাদে ১,২২১ সাল থেকে থাকতে শুরু করেন৷ ক্রুসেড (খ্রিস্টান-মুসলিম ধর্মযুদ্ধ) চলার সময় এই প্রাসাদের বাসিন্দারা বছরের পর বছর এই এলাকায় তুর্কি সেনাদের ঢুকতে বাধা দিয়েছিল৷ সেই সময়ের পটভূমিতেই মূলত ড্রাকুলা চরিত্রের সৃষ্টি৷ মানুষের রক্ত জমিয়ে দেয়ার জন্য একসময় নাকি এই প্রাসাদের নামটুকুই যথেষ্ট ছিল। এর নাম শুনলে অগোচরেই নাকি মানুষ ভয়ে বুকে ক্রুশ চিহ্ন আঁকত৷বর্তমানে ব্রান দুর্গ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া তিন মালিকের বয়স ৭০ ছাড়িয়েছে৷ রোমানিয়া সরকারের কাছে তারা এই প্রাসাদ বিক্রি করতে চেয়েছিলেন আট কোটি মার্কিন ডলারে৷ কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে দায়িত্ব দিয়েছেন এক মার্কিন সংস্থাকে৷ প্রতি বছর প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ পর্যটক এই দুর্গের আধো অন্ধকার অলিগলিতে ঘুরে বেড়ানোর গা শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা নিতে যান৷ উপর থেকে দেখেন দুর্গের সেই উঠান, যেখানে নাকি ঘুরে বেড়াত কাউন্টের অনুগত নেকড়ের পাল৷
0 মন্তব্যসমূহ
এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।
Emoji