ইন্টারনেট তার সেবা সরবরাহ করবে মহাকাশ থেকে।
মহাকাশ থেকে আশা ইন্টারনেট ছড়িয়ে যাবে দেশ দেশান্তরে |
এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান "স্পেস এক্স (Space X)"-দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশ-সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। এরই ফলশ্রুতিতে ইতিমধ্যে গুগল ও ফিডেলটি এই প্রতিষ্ঠানে ১০০ কোটি মর্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে, যার ফলে এই বিনিয়োগের মাধ্যমে গুগল ও ফিডেলটি স্পেস এক্সের ১০ শতাংশের মালিকানা পেয়ে গেল।
স্পেস এক্স অবশ্য এত বড় বিনিয়োগ পাওয়ার পর তাদের পরবর্তী পরিকল্পনার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তবে স্পেস এক্সের প্রতিষ্ঠাতা এলন মাস্ক আগামী ১২ বছরের মধ্যেই মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপন করতে চান বলে জানিয়েছে প্রযুক্তি-বিশ্লেষকেরা। ইতিমধ্যেই স্পেস এক্স মঙ্গল গ্রহে একটি শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে আর এরই পাশাপাশি এলন মাস্কের এই অসাধারণ প্রতিষ্ঠানটি স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার লক্ষ্যেও কাজ করছে। অবশ্য চারদিকে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে যে, গুগল হঠাৎ কেন মহাকাশ প্রকল্পে এত বিনিয়োগ করছে? এই প্রশ্নের উত্তরে প্রযুক্তি-বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, স্পেস এক্সে বিনিয়োগ ছাড়াও গুগল প্রজেক্ট লুন নামে বেলুনের মাধ্যমে মহাকাশ থেকে ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার আলাদা একটি প্রকল্প পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির ল্যারি পেজ ও সের্গেই বিন অর্থাৎ দুই কর্ণধার, এ দুজনের মাঝে মহাকাশ প্রকল্প নিয়ে বেশ উৎসাহ রয়েছে।
অন্যদিকে এ প্রকল্পে গুগলের লাভের পরিমাণও বেশি হবে। আর এর মূল কারণ হলো দিন দিন মানুষের ইন্টারনেট ব্যবহারের সংখ্যা যত বেশি হবে ঠিক ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন ও ডিজিটাল অ্যাড নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে গুগলের মুনাফা করার সম্ভাবনাও তত বেশী বেড়ে যাবে।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, ‘খুব শিগগিরই মানুষ মহাকাশভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন যেমন ইমেজিং স্যাটেলাইটের মতো প্রযুক্তির কল্যাণে আরও সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুব সহজেই তাদের হাতের নাগালে আসবে। যার কারণে গুগল বেশ স্বস্তিতে আছে স্পেস এক্সে বিনিয়োগ করতে পেরে। খুব শিগগিরই স্পেস এক্স মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে।’
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, ‘খুব শিগগিরই মানুষ মহাকাশভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন যেমন ইমেজিং স্যাটেলাইটের মতো প্রযুক্তির কল্যাণে আরও সহজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে। যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য খুব সহজেই তাদের হাতের নাগালে আসবে। যার কারণে গুগল বেশ স্বস্তিতে আছে স্পেস এক্সে বিনিয়োগ করতে পেরে। খুব শিগগিরই স্পেস এক্স মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে।’
গুগলের ডোনাল্ড হ্যারিসন স্পেস এক্সের সঙ্গে এই চুক্তির ফলশ্রুতিতে স্পেস এক্সের পরিচালনা বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছেন। এরমধ্যে গুগল স্পেস এক্সের মহাকাশযান ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে রসদ সরবরাহ করছে।
স্পেস এক্স ছাড়াও ওয়ানওয়েব নামের একটি কৃত্রিম উপগ্রহ নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান সম্প্রতি মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর আরেকটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে ।এরইমাঝে রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্রুপ এবং মার্কিন চিপ নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান কোয়ালকম এই প্রতিষ্ঠানটিতে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।
এই প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে মহাকাশ থেকে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া।সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ভার্জিন ও কোয়ালকম সারা বিশ্বে ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা দিতে ৬৪৮টি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। অন্যদিকে এখনো বিশ্বে ইন্টারনেট সুবিধা বঞ্চিতদের সংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি, আর এরই কারণে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে যেন খুব দ্রুত এবং সাশ্রয়ী খরচে ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া যায় এই লক্ষেই প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। মহাকাশযান নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান ভার্জিন ইতিমধ্যেই মহাকাশে একটি কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর লক্ষ্যে বিশেষ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ সেবা লাঞ্চারওয়ান তৈরি করছে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি মহাকাশে পর্যটক পাঠানোর জন্য স্পেসস্পেস টু নামে একটি যান তৈরি করছে ।
বর্তমানে ওয়ানওয়েব নামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে ওয়ার্ল্ডভু স্যাটেলাইট নামের এই প্রতিষ্ঠানটি।ওয়ানওয়েবের প্রধান নির্বাহী গ্রেগ ওয়েলার জানিয়েছেন যে, মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানোর বিষয়ে সম্ভাব্য নির্মাতা, সরবরাহকারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে বলে।বিশ্বজুড়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও টেলিফোন সেবা দেওয়াই এর কাজ হবে। মহাকাশে ওয়ানওয়েবের তৈরি এই কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে মোট খরচ হবে ১৫০ কোটি থেকে ২০০ কোটি মার্কিন ডলার যার একেকটির ওজন হবে ১৩৬ কেজি এবং এটি পৃথিবী থেকে ৭৫০ মাইল দূরে অবস্থান করবে।
ওয়ানওয়েব কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের ইন্টারনেট সেবার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে মোবাইল অপারেটরদের জন্য নেটওয়ার্ক সেবা দিয়ে থাকবে, যেখানে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছেও মোবাইল সেবা পৌছে দেয়া সম্ভব হবে। ভার্জিন গ্যালাকটিকের প্রধান নির্বাহী রিচার্ড ব্র্যানসন বলেন, "বিশ্বজুড়ে যে ৩০০ কোটি মানুষ যারা ইন্টারনেট সেবা হতে বঞ্চিত হয়ে আসছিলো তাদের কাছেও ইন্টারনেট সংযোগ পৌছে দেওয়া সম্ভব হবে।"
0 মন্তব্যসমূহ
এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।
Emoji