Ad Code

Responsive Advertisement

ইন্টারনেট এখন একজনের মস্তিষ্ক থেকে আরেকজনের মস্তিষ্কে!

ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা একজনের মস্তিষ্কের সিগন্যাল আরেকজনের মস্তিষ্কে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন। এর মাধ্যমে একজনের মস্তিষ্কের কার্যক্রম দিয়ে আরেকজনের শরীরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। এই গবেষণা চালানোর সময় একজন থেকে আরেকজন প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলেন।

ইন্টারনেট এখন একজনের মস্তিষ্ক থেকে আরেকজনের মস্তিষ্কে!

এই গবেষণাটি থেকে প্রমাণিত হলো যে, মানুষের মস্তিষ্কের সাথে মস্তিষ্কের যোগাযোগের নতুন একযুগ আসন্ন। এতে এক মস্তিষ্ক থেকে আরেক মস্তিষ্কে সরাসরি তথ্য প্রবেশ করান যাবে। গবেষণাটিতে ছয় জন মানুষকে দুইজন দুইজন করে ভাগ করা হয়। প্রতিজনের মস্তিষ্কের সাথে একটি করে ইলেকট্রোএনসেফেলোগ্রাফী মেশিন যুক্ত করে দেওয়া হয়।

কোন মানুষ কোন কাজের কথা ভাবলে তার মস্তিষ্কে কতগুলো ওয়েব তৈরী হয়। এই ওয়েবগুলোই একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মস্তিষ্ক শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রতঙ্গকে কোন কাজ করতে নির্দেশ দেয়। ইলেক্ট্রোএনসেলোগ্রাফী মেশিন এই ওয়েবগুলো সংরক্ষণ করতে পারে। মেশিনটি পরবর্তীতে এই ওয়েবগুলোকে পরবর্তীতে বৈদ্যুতিক সিগন্যালে পরিণত করা হয়। এই সিগন্যালগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে গ্রহীতার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৮০০ মিটার দূরের একেকটি বিল্ডিংয়ে রাখা হয়। তারপর গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদ্বয়ের মধ্যে দাতা হাত নাড়ানর জন্য নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ তার মস্তিষ্কে এক ধরণের ওয়েব তৈরী করে। ওয়েবটি গ্রহণ করে ইলেক্ট্রোএনসেফেলোগ্রাফী মেশিন। পরে মেশিনটি ওয়েবকে ইলেক্ট্রিক সিগন্যালে পরিণত করে। এই সিগন্যালটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ৮০০ মিটার দূরে থাকা ব্যক্তিটির মস্তিষ্কে প্রবেশ করান হয়। 

পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত সিগন্যালটি ছিল মানুষের হাত নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। তাই সিগন্যালটি মস্তিষ্কের এমন অংশে পৌছান হয় যা হাত নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করে। ফলস্বরূপ গ্রহীতা ব্যক্তির হাত নাড়াতে থাকেন।

গবেষণায় অন্যান্য ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ আরও উদ্দীপনাকর। ৮০০ মিটার দূরে থেকে একজন ব্যক্তি কোন একটি কম্পিউটার গেম খেলার জন্য প্রয়োজনীয় কমান্ড দেওয়ার কথা ভাবতে থাকেন। এই ভাবনাগুলো ওই ব্যক্তির মস্তিষ্কে এক ধরণের ওয়েব তৈরী করে। ওয়েবগুলো ধারণ করা হয় ইলেক্ট্রোএনসেলোগ্রাফী মেশিনের মাধ্যমে। পরবর্তীতে একই মেশিনে ওয়েবগুলোকে ইলেক্ট্রিক সিগন্যালের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয় আরেক ব্যক্তির মস্তিষ্কে। দ্বিতীয় ব্যক্তিটি কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে না তাকিয়েই প্রথম ব্যক্তির ভাবনা অনুসারেই কম্পিউটার গেমটি খেলার জন্য কমান্ড দিতে শুরু করেছেন।

একই পরীক্ষা একাধিক জোড় মানুষের মধ্যে করে দেখা হয়। বিজ্ঞানীরা দেখেন, সবসময় এক ব্যক্তির মস্তিষ্ক থেকে আরেক ব্যক্তির মস্তিষ্কে তথ্য পাঠাতে সমপরিমাণ সফলতা অর্জন করা যায় না। সফলতার পরিমাণ ২৫ থেকে ৮৩ ভাগের মধ্যে উঠা নামা করে। এই উঠা নামার কারণ হচ্ছে, তথ্যদাতার সঠিকভাবে নির্দেশ দিতে পারার যোগ্যতার হেরফের হওয়া। এইভাবে একজনের মস্তিষ্ক থেকে আরেকজনের মস্তিষ্কে তথ্য পাঠাতে বিজ্ঞানীদের এক সেকেন্ডেরও কম সময় লেগেছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ