Ad Code

Responsive Advertisement

ডিজিটাল উইন্ডো প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ

 

'ডিজিটাল উইন্ডো' প্রকল্পের কাজ শুরু করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী জুলাই থেকে ডিজিটাল উইন্ডো তৈরির কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। এখন থেকে ইনফো সরকার ফেজ থ্রি-কে (ন্যাশনাল আইসিটি ইনফো নেটওয়ার্ক ফর বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট) ডিজিটাল উইন্ডো নামেই ডাকা হবে। কাজের সুবিধার্থে এই নতুন নামকরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

 

তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের মধ্যে ডিজিটাল উইন্ডো প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা ‌‌ দেশের সব ইউনিয়নে পৌঁছে যাব। এর ফলে সমাজের সব স্তরের মানুষের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য কমবে, বাড়বে অর্থনৈতিক প্রভাব। জানা গেছে, ডিজিটাল উইন্ডো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যে চীনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সাক্ষর হয়েছে। এবং রাশিয়ার সঙ্গে প্রকল্প কারিগরী সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিজিটাল উইন্ডো প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানো হবে। ফলে স্কুল, কলেজ এবং জনাকীর্ণ স্থানে ইন্টারনেট পৌঁছবে। সারাদেশে সরকার যে ১ লাখ ওয়াই-ফাই হট স্পট তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল তা এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়াও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে (সাবেক ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্র) ডিজিটাল উইন্ডো প্রকল্পের আওতায় কানেক্টিভিটি দেওয়া হবে এবং এগুলো মিনি বিপিও (বিজসেন প্রসেস আউটসোর্সিং) সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

লক্ষ্য ছিল ২০১৮ সালের মধ্যে ডিজিটাল উইন্ডো (বা ইনফো সরকার থ্রি) প্রকল্প বাস্তবায়নের। তবে সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রকল্পটি ২০১৬ সালের মধ্যেই শেষ করা হবে। প্রকল্পটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহ রয়েছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে ইনফো সরকার ফেজ-টু চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের উপজেলা পর্যন্ত ফাইবার অপটিক কানেক্টিভিটি পৌঁছবে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই ডিজিটাল উইন্ডো বাস্তাবায়নের পথে যাবে সরকার।
এদিকে এই প্রকল্পের আওতায় গড়ে তোলা হবে ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত হাই-টেক পার্কে ২০ একর জায়গা জুড়ে এই ডাটা সেন্টার তৈরি করা হবে। হাইটেক পার্কে যে ডাটা সেন্টার গড়ে তোলা হবে সেটি হবে টায়ার-ফোর এর আওতায়। বিশালাকার এই ডাটা সেন্টারের র‌্যাকের সংখ্যা হবে ছয় শতাধিক বা তার চেয়েও বেশি।

ডিজিটাল ভূমি রেকর্ড, জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র সর্বোপরি দেশের ১৬ কোটি মানুষের তথ্য সংরক্ষণ করতে হলে বিসিসিতে যে 'ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার' রয়েছে তাতে স্থান সংকুলান হবে না। এসব বিবেচনায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সব ধরনের তথ্য সংরক্ষণের জন্য এই ডাটাসেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে।
অন্যদিকে, দেশের যাবতীয় ইলেকট্রনিক তথ্য সংরক্ষণ এবং নাগরিক সেবা সুবিধা চালু করতে বাংলাদেশ সরকার ক্লাউডে (গভর্নমেন্ট ক্লাউড) যুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এ বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক আমরা ক্লাউডে যাচ্ছি। তবে সেটা কালিয়াকৈরে ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার (বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম) নির্মাণের পরে। গভর্নমেন্ট ক্লাউডের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে এবং বড় ধরনের তথ্য সংরক্ষণের জন্য আমাদের ক্লাউডে যেতেই হবে।

প্রসঙ্গত, ইন্টারনেট নির্ভর কম্পিউটিংই হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং। এটি এমন একটি কম্পিউটিং প্রযুক্তি যা ইন্টারনেট এবং কেন্দ্রীয় রিমোট সার্ভার ব্যবহারের মাধ্যমে ডাটা এবং অ্যাপস নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে সক্ষম। ইন্টারনেটভিত্তিক অ্যাপসের মাধ্যমে যেকোনও একটি কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশনগুলো ইন্সটলেশন ছাড়াও নিজস্ব ফাইলগুলোতে একসেস করা যায়। এতে ওয়েবে সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যবহারকারীকে ক্লায়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকারও একটি ক্লায়েন্ট হিসেবে এই সেবা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ