শীর্ষ স্মার্টফোনের ভাল-মন্দের খবর জেনে নেই।
২০১৪ সালের শীর্ষ স্মার্টফোনের তালিকায় চোখ রাখলে দেখা যাবে যে আগের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবারও প্রজুক্তিপণ্যের জায়ান্টরাই স্থান দখল করে নিয়েছে।
স্মার্টফোনগুলো পালাক্রমে নিত্য-নতুন প্রযুক্তির নানা মনকাড়া দিক নিয়ে প্রযুক্তির বাজারে এসেছে। স্মার্ট প্রেমিদের নিজেদের দখলের সাথে সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সুপরিকল্পিত পণ্য-নকশা করেছে এই বিখ্যাত স্মার্টফোনের প্রতিষ্ঠানগুলো।
শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোনের এই প্রতিষ্ঠানগুলোর চেষ্টা অবশ্য বিফলে যেমন যায়নি ঠিক তেমনি ত্রটিও এড়াতে পারে নি আর এর কারণ হলো বছরের শেষে প্রযুক্তির বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণে এসব সেরা পণ্যের দুর্বল দিকগুলোর উঠে এসেছে।
শীর্ষস্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে অ্যাপল, স্যামসাং, এলজি, এইচটিসি, সনি ও মটোরোলার নাম।
এবছর চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে কোরিয়ান জায়ান্ট গ্যালাক্সি সিরিজের নোট ৪ এবং এস৫ এবং অপরদিকে অ্যাপলের নতুন দুটি আইফোনই সেরার খেতাব অর্জন করেছে।
নিম্নে এই শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোনগুলোর ভাল-মন্দ দিকগুলো তুলে ধরা হলোঃ-
১- গ্যালাক্সি নোট৪:
Galaxy note4 |
ভালো দিকঃ-
এই ভার্সনটি যা ৫.৭ ইঞ্চির উচ্চ-রেজ্যুলেশনের মনোমুগ্ধকর পর্দা সম্বলিত এবং এটি ফটোগ্রাফিতে আগ্রহীদের জন্য সম্পূর্ণ উপযুক্ত। এতে রয়েছে অপ্টিক্যাল ইমেজ স্টাবলাইজেসেন বিশিষ্টের ১৬ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা যা বাহিরের ছবিগুলো অসাধারনভাবে তুলতে সক্ষম। এতে তাড়াতাড়ি কাজ করা যায় এবং যারা সব সময় কিছু না কিছু লিখতে পছন্দ করে তাদের জন্য এই ফ্যাবলেটটি খুবই উপকারে আসবে।
খারাপ দিকঃ-
এটির প্রধান খারাপ দিকটি হলো এর চড়া দাম বাজারে অন্যান্য ফ্যাবলেটের দামের তুলনায় এটির দাম অনেক বেশী বলে জানা গেছে অন্যদিকে ছবির ব্যাপারে একটি খারাপ দিক রয়েছে যে কম আলোতে এর ছবির কোয়ালিটি খুব একটা ভালো হয় না।
২. গ্যালাক্সি এস৫:
Samsung galaxy s5 |
ভালো দিকঃ-
এই পণ্যটিতে রয়েছে ৫.১ ইঞ্চি উজ্জ্বল সুদৃশ্য পর্দা যেখানে আছে ৪.৪ কিটক্যাট। পন্যের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উচ্চক্ষমতার কোয়াড কোর প্রসেসর, ক্যামেরা অনন্য। বলা হয়ে থাকে যে গ্যালাক্সি এস ৪ এর চেয়ে এটি অনেক টেকশই ও সুদর্শন।
খারাপ দিকঃ-
আবার অন্যদিকে নোট ৪ এর ন্যায় এই পণ্যটিতেও নির্ধারণ করা হয়েছে অত্যাধিক দাম। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, এস ৫ এ থাকা ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার নিয়েও ব্যবহারকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারে।
৩.এলজি জি৩:
LG G3 |
ভালো দিকঃ-
এর সবচেয়ে ভালো দিকটি হলো নিরবিচ্ছিন্ন কথোপকথনের সুবিধা এবং এর সাথে রয়েছে এল্টিই ডেটা স্পীড, চমকপ্রদ ক্যামেরা ও উজ্জ্বল ডিসপ্লে এবং আরও রয়েছে স্ল্যাপি কোয়াড কোর প্রসেসর। এতেও ব্যবহার করা হয়েছে ৪.৪ কিটক্যাট যা এলজির সব মডেলের থেকে এলজির এই মডেলটি সবচেয়ে বেশী সুন্দর।
খারাপ দিকঃ-
এই মডেলটির সবচেয়ে বেশী যে ব্যাপারটি সমালোচিত হয়েছে তা হলো তা হলো ২৫৬০ বাই ১৪৪০ পিক্সেল রেজ্যূলেশনের নতুন কিউএইচডি ডিসপ্লের এ পণ্যটি সম্পূর্ণভাবে এনার্জি ধারণ করায় পণ্যটি নামমাত্রই চার্জছাড়া একদিন চলে।
৪.সনি এক্সপেরিয়া জেড৩:
Sony xperia z3 |
ভালো দিকঃ-
এই পন্যটির ভালো দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে এটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারী রয়েছে, ৫.২ ইঞ্চির আকর্ষণীয় ডিসপ্লে ও অসাধারণ নকশা এমনকি এটি পানি ও ধুলো প্রতিরোধি। জেড ৩ ব্যবহারকারীদের যদি PS4 থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই আর এর কারণ হলো ব্যবহারকারী এর মাধ্যমে দূর থেকে PS4 উপভোগ করতে পারবে।
খারাপ দিকঃ-
জেড ৩-এর খারাপ দিক হলো এর ২০.৭ এমপি ক্যামেরায় অটোফোকাসে কিছুটা সমস্যা তৈরি করে। ফ্রন্ট ক্যামরা মাত্র ২.২ এম পি যেখানে বাজারে HTC Desire 820-তে রেয়েছে ৮ এম পি ক্যামেরা আর এর ব্যাটারি Replaceable নয়।
৫. মটোরোলা মটো জি:
Motorola moto g |
ভালো দিকঃ-
মটোরোলা মটো জিতে রয়েছে ৫ ইঞ্চি আকৃতি ডিসপ্লে যেখানে রয়েছে 'সিগনেচার হ্যান্ড ফ্রেন্ডলি' ডিজাইন । হার্ডওয়্যারের বৈশিষ্ট্যগুলি বিচার করলে এর দাম কিছু কম যার কারণে এর বিক্রির পরিমাণও ভালো।
খারাপ দিকঃ-
এর খারাপ দিকগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত ডেটা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে এতোটা দ্রুতগামী নয় এটি।
৬.আইফোন ৬:
Iphone 6 |
ভালো দিকঃ-
আইফোনের আগের মডেল্গুলোর তুলনায় এটি বেশ পাতলা এবং এতে রয়েছে লেটেস্ট আইওএস৮ যুক্ত ৪.৭ ইঞ্চি ডিসপ্লের। এর পাশাপাশি রয়েছেচ উন্নত ওয়্যারলেস স্পীড, অটোফোকাস ক্যামেরা, অ্যাপল পে সুবিধা, নিরাপদ পেমেন্টে সিস্টেম এবং অনেক ডেটা ট্রান্সফার করতে পারে।
খারাপ দিকঃ-
এই মডেলটির খারাপ দিকে আছে আগের বছরের ৫এস থেকে এর ব্যাটারি খুব উন্নত হয়নি, ধুলো এবং পানি প্রতিরোধী সুবিধা নেই। এর ব্যাটারি বদলযোগ্য নয়। যুক্ত ক্যামেরা এমপি, ১ জিবি র্যাম কোয়াড কোর প্রসেসর প্রত্যাশিত নয়।
৭.আইফোন ৬ প্লাস:
Iphone 6 plus |
ভালো দিকঃ-
আইফোন ৬ এর কিছু খারাপ দিক মুছতে আইফোন ৬ প্লাসে রয়েছে টেকসই ব্যাটারি এছাড়া ৫.৫ ইঞ্চি পর্দা কেবল আকারেই বড় নয় উৎকর্ষতাও রয়েছে। আরও রয়েছে অপটিক্যাল ইমেজ স্টাবলাইজেশন যার ফলে কম আলোয় তোলা ছবিগুলোর মান বাড়িয়ে দিতে পারদর্শী।
খারাপ দিকঃ-
অন্যদিকে বিশ্লষকদের মতে পণ্যটি সবার জন্য উপযুক্ত নয় এবং এর পাশাপাশি চড়া দাম তো আছেই। এছাড়া সমগ্র নকশাটি লক্ষ্য করলে আগের মডেলগুলোর তুলনায় এটি কম স্বতন্ত্র। আর বড় কিবোর্ড, অ্যাপসের স্পষ্টতা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েই গেছে।
৮.এইচটিসি ওয়ান এম৮:
HTC one M8 |
ভালো দিকঃ
HTC One M8- এর মডেলও অন্যান্য স্মার্টফোনের মডেরলের চেয়ে কোন অংশে কম না। ৫ ইঞ্চির সুপার এলসিডিথ্রি স্ক্রিনের এ পণ্যটির নকশা অসাধারণ। এরপাশাপাশি এতে রয়েছে উচ্চমানের হার্ডওয়্যার, হাই কোয়ালিটি লাউড স্পিকার, ডুয়ো-লেন্স ক্যামেরায় রিফোকাসিং সহ দরকারি ক্যামেরা ফিচার এবং আনলক জেস্চার।
খারাপ দিকঃ
তবে সমস্যার মধ্যে রয়েছে ন্যানো সিম কার্ড স্লড, মাত্র ৪ এম পি ক্যামরা আর এর আউট লুক অন্যান্য মোবাইলের চেয়ে এতোটা আকারষনীয় নয়।
তবে শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোনগুলোর ভালো ও মন্দ দিকগুলো আলোচনা করা হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ
এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।
Emoji