Ad Code

Responsive Advertisement

চা/কফি হতে পারে আপনার ক্যান্সারের কারণ! কি খাবেন? চা না কফি?

স্থান বা কাল যাই হোক না কেন, যে পাত্রেই পরিবেশিত হোক না কেন, কফি কিংবা চা-এ চুমুক মানেই সতেজতা। আর এ দুটি পানীয়ের ক্ষেত্রেই এই সতেজতার পেছনে আছে একটি ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান - ক্যাফিন। 

চা/কফি হতে পারে আপনার ক্যান্সারের কারণ! কি খাবেন? চা না কফি?

এছাড়াও আছে ক্যাফিনের দু-একজন নিকট আত্মীয় যেমন চায়ের ক্যাফিনের সাথে থিওফাইলিন, কোকোতে থিওব্রোমিন ইত্যাদি। ক্যাফিন ও তার আত্মীয়দের এই পুরো দলটিকে বলা হয় জ্যানথিনস্। জ্যানথিনস্ দূর করে ক্লান্তি, অবসন্নতা, শানিত করে চিন্তাশক্তি। এ তো গেল গুণের কথা। কিন্তু ক্যাফিনের পরিচয় হলো অন্যরকম। ক্যাফিন হলো সেই ধরনের 'ড্রাগ' যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে অস্বাভাবিকভাবে উত্তেজিত করে এবং এই অস্বাভাবিক উত্তেজনা প্রভাব ফেলে বিভিন্নভাবে - 

• রক্তে ফ্যাটের মাত্রা বৃদ্ধি করে
• উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়
• অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড নিঃসরণ করে
• ব্লাড সুগারের মাত্রা বাড়ায়
• হৃদস্পন্দন অদ্ভুত রকমের দ্রুত হয়ে যায়

ক্যাফিনে শরীরের কী পরিমাণ ক্ষতি হবে সেটা নির্ভর করে মূলত চা, কফি ইত্যাদির প্রস্তুত প্রণালীর ওপর। সাধারণভাবে বললে ব্যাপারটা এমন যে, যত বেশিক্ষণ ধরে চা/কফি ভেজাবেন বা জ্বাল দেবেন তত বেশি ক্যাফিন মিশবে আপনার পানীয়ে। ১ কাপ বা প্রায় ৫ আউন্স পরিমাণ বিভিন্ন পানীয়তে ক্যাফিনের পরিমাণ থাকে এ রকম -

কফি: ৯০-১২০ মিলিগ্রাম
চা: ৩০-৬০ মিলিগ্রাম
কোকো: ৫০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত
কোলা ড্রিঙ্কস: ১৫-৪০ মিলিগ্রাম

কফিতে যে পরিমাণ ক্যাফিন আছে, চা-এ আছে তার অর্ধেক। এই হিসেবে কফির চেয়ে চা কিছুটা নিরাপদ। কিন্তু কয়েকজন গবেষকের মতে, চা কফির চেয়েও বেশি বিপজ্জনক। এ ধরনের মতামতের মূল কারণ হলো, পাশ্চাত্যে যারা দুধ-ছাড়া চা বেশি খান তাদের মধ্যে পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বেশি। সমস্ত দোষ-গুণ বিচার করে পুষ্টিতাত্ত্বিকরা বলছেন, স্কিমড মিল্কের প্রোটিন চায়ের ট্যানিনকে দোষমুক্ত করে বলে স্কিমড মিল্কসহ পাতলা লিকারের হালকা চা ২-৩ বার অনেকটা নিরাপদ। তবে চা খাবেন না কি কফি, সে সিদ্ধান্ত নেবার আগে জেনে নিন ক্যাফিন সম্পর্কে কিছু কথা -


ক্যাফিনিজম

চা/কফি ইত্যাদির মাধ্যমে অনেক বেশি ক্যাফিন গ্রহণে যে শারীরিক অসুস্থতার সৃষ্টি হয় তাকেই বলে ক্যাফিনিজম। ক্যাফিনিজম শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সমস্যার সৃষ্টি করে। চকলেট, কোলা ড্রিঙ্কস ইত্যাদির প্রতি শিশুদের দুর্বলতা স্বাভাবিক। অনেক মা-বাবাও এতে প্রশ্রয় দেন। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো, একটা ছোট চকলেট বার-এ ক্যাফিন থাকছে প্রায় ২৫ মিলিগ্রাম এবং একটা কোলা ড্রিঙ্কসে প্রায় ৪০ মিলিগ্রাম। এই হিসেবে ৭ বছর বয়সের একটি শিশুর (যার ওজন মাত্র ২৭ কেজি) সারাদিনে তিনটি কোলা ড্রিঙ্কস খাওয়া মানে প্রায় ৮০ কেজি ওজনের একজন বয়স্ক লোকের ৮ কাপ কফি খাওয়ার সমান! ঠিক এ কারণেই ডাক্তাররা ছোট ছেলেমেয়েদের চকলেট, কোলা ড্রিঙ্কস বেশি খেতে নিষেধ করেন। কারণ সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে বদ মেজাজ, অনিদ্রা ইত্যাদি ক্যাফিন-জনিত উপসর্গের প্রকোপ বেড়ে যায়।


ক্যাফিন-জনিত অন্যান্য উপসর্গ

অতিরিক্ত ক্যাফিন গ্রহণে আকস্মিকভাবে নানা ধরনের হৃদরোগের সূচনা হতে পারে। আর যারা আগে থেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত, ক্যাফিন তাদের ক্ষেত্রে মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে। অনেক সময় প্রসবগত সমস্যার জন্য ক্যাফিনকে দোষী করা হয়। অনেক ডাক্তারই গর্ভবতী মেয়েদের ক্যাফিনযুক্ত বিভিন্ন পানীয় গ্রহণ করতে নিষেধ করেন। আসলে ক্যাফিনের পারমানবিক সংযুক্তটি এমনই যে তা গর্ভপত্রকে (placenta) অতিক্রম করে বিকাশমান ভ্রূণটিরও ক্ষতি করতে পারে। আমেরিকার ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের Dr. Mulvihil বলেন, ক্রোমোজমগত পরিবর্তন এবং অস্বাভাবিক শিশু জন্মগ্রহণের পেছনে ক্যাফিনের একটা ভূমিকা থাকা অসম্ভব কিছু নয়। অনেক গবেষক মনে করেন যে দুশ্চিন্তা, রুক্ষ মেজাজ, ক্রোধ, অনিদ্রা, গ্যাসট্রাইটিস ইত্যাদি উপসর্গের সঙ্গেও ক্যাফিনের যোগসূত্র রয়েছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ