Ad Code

Responsive Advertisement

অনলাইন লেনদেনের নিরাপত্তা এবং সতর্কতা

 

প্রযুক্তিকে পুঁজি করে এখন লেনদেনেও পরিবর্তন এসেছে। কাগজের টাকার বদলে ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড এসেছে। এমনকি অনলাইনের মাধ্যমেও এখন লেনদেন হচ্ছে। দেশেও নতুন ধরনের এ লেনদেন পরিমাণ বৃদ্ধির পাচ্ছে এবং জনপ্রিয়তা বাড়ছে। শুরুর দিকের অস্বস্তি কাটিয়ে এখন সাচ্ছন্দেই অনলাইন লেনদেন হচ্ছে।

 কাগজের টাকা বহনের ক্ষেত্রে চোর-ডাকাতের ভয় তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় অনেককে। সেদিক থেকে অনলাইন কিছুটা সুবিধাজনক হলেও সেখানেও রয়েছে ডাকাতের ভয়। একটু অসাবধান হলেই হ্যাকার নামের এসব ডাকাতরা এক নিমিষেই ফতুর করে ছাড়বে। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এ মাধ্যমে সামান্য কিছু ভুলের জন্য হয়ে যেতে পারে অনেক বড় ক্ষতি। তাই সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। এ কারণে অনলাইনে ক্রেডিট কিংবা ডেবিট কার্ড নম্বর ব্যবহার করে লেনদেনসহ অনলাইন ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা বাধ্যতামূলক। কিছু বিষয় মনে রাখলে অনলাইনে নিরাপদে লেনদেন করা যায়, অর্থ চুরির আশংকা এড়ানো যায়।

অনলাইনে লেনদেনে সচেতন ও সতর্ক থাকার উপায়গুলো নিয়ে এ প্রতিবেদন।

এন্টিভাইরাস ব্যবহার
ভাইরাসের মাধ্যমে তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হ্যাকারদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কৌশল। ইন্টারনেটের বিশাল জগতে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নিত্য নতুন ভাইরাস। তাই সর্বশেষ আপডেটযুক্ত এন্টিভাইরাস ব্যবহার করা উচিত।
এন্টিভাইরাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেনতেনটি ইন্সটল করবেন না। বাজারে এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার নাম দিয়ে বেশ কিছু সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো আসলে হ্যাকারদের তৈরি। এগুলো ইন্সটল করলে তথ্য নিরাপদে রাখার চেয়ে চুরি হওয়ার ভয় থাকে। তাই ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করা উচিত।

জনপ্রিয় অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে তুলনামূলক কোনটি ভালো তা এভি-কম্প্যারেটিভ ওয়েবসাইট থেকে দেখে নেওয়া যাবে।

সফটওয়্যারের স্বয়ংক্রিয় আপডেট
কম্পিউটারের প্রতিটি সফটওয়্যারের স্বয়ক্রিয় আপডেট অপশনটি অন করে রাখা উচিত। প্রতিটি সফটওয়্যার বিশেষ করে ব্রাউজারগুলোর সর্বশেষ সংস্করণ ব্যবহার করা উচিত।
software_techshohor

কেননা সফটওয়্যার তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো আগের সংস্করণের বিভিন্ন ক্রুটি (বাগ) দূর করে ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করে নতুন সংস্করণ আনে। যা আগের সংস্করণ থেকে বেশি নিরাপদ হয়ে থাকে। এ কারণে সর্বশেষ আপডেট ব্যবহার করা উচিত।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার

অনলাইনে লেনদেন নিরাপদে রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পাসওয়ার্ডের নিরাপত্তা। সহজ-সরল শব্দ ব্যবহার করে গোপন নম্বর দেওয়া উচিত নয়। পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় নম্বর, শব্দ এবং সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করা ভালো।
যেমন:Kas^^**000sfd987

এ ছাড়া নিয়মিত বিরতিতে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করলে তক্কে তক্কে থাকা হ্যাকাররা একাউন্টের নাগাল পাবে না।

ক্যাশ অন ডেলিভারি অপশন
অনলাইনে কোনো কিছু কেনার প্রয়োজন হলে ক্যান অন ডেলিভারি অপশন থাকলে সেটি ব্যবহার করা উচিত। এর অর্থ পন্য হাতে পাওয়ার পর টাকা প্রদান। এতে লেনদেনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। অর্থ ও পণ্য হারানোর ভয় থাকে না।

অনেক ভুয়া ওয়েবেসাইট রয়েছে যেগুলো টাকা আগে নিলেও পণ্য আর বাসায় পৌঁছায় না। তাই ক্যাশ অন ডেলিভারি অপশনটি সবচেয়ে বেশি নিরপাদ।

স্প্যাম ই-মেইল

হ্যাকাররা ব্যবহারকারীদের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডসহ অন্যান্য অনলাইন লেনদেন মাধ্যমের তথ্য চুরি করার জন্য অনেক কৌশল অবলম্বন করে থাকে। এর মধ্যে উলেখ্যযোগ্য হল স্প্যামিং।
ব্যবহারকারীদের ই-মেইলে নানা লোভনীয় অফারের কথা জানিয়ে মেইল পাঠানো হয়। যখন ব্যবহারকারী হ্যাকারের লোভনীয়

অফারের লোভে মেইলটিতে ক্লিক করে সেই অনুযায়ী কাজ করবে তখনই ব্যবহাকারীর মেইলের এমনকি কম্পিউটারের সব তথ্য চলে যাবে হ্যাকারের কাছে।তাই ই-মেইলে আসা লোভনীয় অফারসমৃদ্ধ মেইলগুলো সর্ম্পকে সচেতন থাকা উচিত।

ওয়েবসাইটের সার্টিফিকেটওয়েবসাইটের সার্টিফিকেট পরীক্ষা করুণ। নামকরা সাইটগুলো তাদের সাইটের জন্য একধরনের ওয়েব সার্টিফিকেট ব্যবহার করে। এটির অর্থ হচ্ছে ওই সাইটটি পরীক্ষিত।

সাধারনত ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবারের পাশে সাইটটির ফেভআইকন (সাধারনত সাইটের লোগোর ছবি) থাকে। সেখানে ক্লিক করলে দেখা যাবে ওয়েবসাইটটি সার্টিফাইড কি-না।

কোনো কোনো ওয়েবসাইট আছে (বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং অনলাইন কেনাকাটার নামকরা সাইটগুলো) আপনার ব্যক্তিগত ও গোপনীয় স্পর্শকাতর তথ্য নেওয়ার সময় (যেমন: জন্মতারিখ, বাসার ঠিকানা অথবা কার্ডের নম্বার) এনক্রিপ্টেড কানেকশন ব্যবহার করে। এরকম সাইটে ব্রাউজারের অ্যাড্রেসবারে বা স্ট্যাটাসবারে একটা তালার চিহ্ন দেখা যাবে।

ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করা
অনলাইনে লেনদেন করার জন্য সাইবার ক্যাফে কিংবা অন্য কোনো বন্ধুর কম্পিউটার ব্যবহার করা উচিত নয়। সাইবার ক্যাফেতে থাকা কম্পিউটারগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিরাপদ প্রমাণিত হয়েছে।

ফলে বেশিরভাগ মানুষ এরকম অরক্ষিত কম্পিউটার থেকে অনলাইন কেনাকাটা করতে গিয়ে কার্ডের বা ব্যাংকের সব তথ্য অজান্তেই দিয়ে দেন হ্যাকারদেরকে।

পিশিং
অনেকসময় হ্যাকাররা মূল ওয়েবসাইটের মতো করে নকল একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে রাখে যাকে পিশিং বলা হয়। উদাহারণ হিসাবে মনে করুণ আপনি পেপ্যালের ওয়েবসাইট ঢুকবেন, কিন্তু অ্যাড্রেসবারে টাইপ করতে গিয়ে লেখার পর সেটির ওয়েবঠিকানা এসেছে। সঙ্গে রয়েছে পেপ্যালের লোগো।
এটিকে সঠিক মনে করে স্বাভাবিকভাবে ইউজার নেইম, পাসওয়ার্ড লিখে ঢুকে পরলেন। আসলে এতে যে ঘটনা ঘটলো তাতে এ পদ্ধতিতে হ্যাকাররা আপনার ইউজার নেইম এবং পাসওয়ার্ড পেয়ে গেল।

তাই আসল পেপালে ঢোকার সময় কিংবা ব্যাংকিং বা অনলাইন শপিং সাইটে ঢোকার পর আরেকবার মিলিয়ে দেখুন ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস ঠিক আছে কি-না। নিশ্চিত হয়ে লগইন করুণ এবং নিরাপদে লেনদেন সারুন।

পপ আপ বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন না
বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় মাঝে মাঝে বিভিন্ন পপ বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে। এ বিজ্ঞাপনগুলোতে ক্লিক করলে হয়ে যেতে পারে অনেক বড় সর্বনাশ। তাই এগুলোতে ক্লিক করার আগে একটু সাবধান থাকবে হবে। মজিলা ফায়ারফক্সে ad blocker এড অন্স ব্যবহার করলে এ সমস্যা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে।

মোবাইলে সব সময় লগ ইন রাখবেন না
আপনি যদি মোবাইল দিয়ে অনলাইন কেনাকাটা করেন তাহলে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। মোবাইল অবশ্যই লক স্ক্রিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। যদি কোনো কারণে আপনার মোবাইলে চুরি হয় তাহলে পুরো ব্যাংক ব্যালেন্স চোরের হাতে দিয়ে দিলেন।

নিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার
অর্থনৈতিক যে কোনো কাজ যেমন ব্যাংকিং বা কেনাকাটার জন্য প্রাইভেট ওয়াই-ফাই বা ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করুন। ফ্রি ওয়াই-ফাই নেট ব্যবহার করলে এ ধরণের আর্থিক লেনদেন না করাই ভাল।

ওয়েবসাইট নিরাপদ কিনা যাচাই করুণ
URL দেখেই সাইটটি বিশ্বস্ত কিনা তা জানা যায়। যদি সেখানে “https” থাকে তাহলে চোখ বন্ধ করে ধরে নিন এটা নিরাপদ সাইট। অন্যদিকে শুধু “http” থাকলে এই সাইট নিরাপদ কিনা তা URL দেখে বোঝা যাবে না।

লোকেশন ট্রেস এবং প্রাইভেসি সেটিংস ঠিক রাখুন
স্মার্টফোনের এই যুগে এখন অনেক অ্যাপস রয়েছে যেগুলো অটোমেটিক GPS লোকেশন ট্যাক করে এবং অনেক ক্ষেত্রে তা প্রকাশ্যে শেয়ার করে দেয়। ধরুণ আপনার পুরো পরিবার বাইরে বেড়াতে গিয়েছেন। এখন সেই স্থান সবাইকে জানানো নিশ্চয়ই ভাল কথা না। তাই প্রাইভেসি সেটিংস ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।

নিরাপদ ব্রাউজার ব্যবহার
অনলাইনে নিরাপদ থাকতে শক্তিশালী ব্রাউজের বিকল্প নেই। অনেকে এখনও ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করে থাকে। অথচ এ ব্রাউজারে প্রচুর সিকিউরিটি হোল রয়েছে। তাই মজিলা বা গুগল ক্রোম ব্রাউজারের সাথে ভালো এড অনও ব্যবহার করুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।

Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)