Ad Code

Responsive Advertisement

আধুনিক রিভলভার এর কার্যপ্রণালী ।।



আগ্নেয়াস্ত্র, বন্দুক বা রিভলভার এর প্রতি আমাদের সবারই কব বেশি আগ্রহ আছে । মুভি এবং কম্পিউটার গেম এ আমরা দেখি- শত্রু আর নায়ক এর মাঝে প্রচণ্ড গোলাগুলি হচ্ছে । সেখানে আহত-নিহত এর ঘটনা ঘটসে । তো মুভি আর গেমস খেলতে যদি কোন সময় ইচ্ছা হয় জানতে যে কি ভাবে কাজ করে আধুনিক রিভলভার তবে এই লেখাটি আপনার জন্য । শুধু ট্রিগার চাপলেই হবে না জানতে হবে তার মাঝের বিজ্ঞান টাকেও । 




আধুনিক রিভলভার এ আগের মতো খুব বেশি ঝামেলা পোহাতে হয় না বরং এখানে কারট্রিজগুলোকে চেম্বারে এমনভাবেই রাখা হয় যেন তারা রিভলভার এবং এর ব্যারেল একই লাইন বরাবর হয় । আর এই চেম্বার অর্থাৎ সিলিন্ডারের ঠিক পেছন দিকে স্প্রিং যুক্ত ছোট একটি Hammer (লোহা পেটানো হাতুড়ি নয়) আটকানো থাকে, এটিও ব্যারেলের একই সরলরেখা বরাবর থাকে ।


আসুন ব্যারেল সম্পর্কে একটু জেনি নেই । ব্যারেল মূলত বুলেটটি শেষ পর্যন্ত যে নল দিয়ে বের হয় তাকেই বলে । ব্যারেলের ভেতরটি সর্পিল আকারে খাঁজকাটা থাকে (ছবির মতো) । বুলেটটি নল দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রকার ঘূর্ণন তৈরী হয় এর মাঝে ।  বুলেট অনেক বেশি স্থায়িত্ব পায় এর ফলে । সুতরাং ব্যারেল বড় হলে, বুলেটের স্থায়িত্বও বেড়ে যায় । আবার ব্যারেল যদি বড় হয় বুলেটের গতিও বৃদ্ধি পায় । কেননা বুলেটের উপর তখন ভেতরের বায়ুচাপ অনেক বেশি সময় ধরে কাজ করে । ভাবছেন অ্যাকশান মুভিতে আবার কেন বায়ু চাপ নিয়ে আসলাম? তা জানতে পারব একটু পরেই । 


আসুন এবার একটু বুলেট সম্পর্কে জেনে নেই । ডিম্বাকৃতির অংশটি বুলেটের উপরের দিকে থাকে যা আমরা খালি চোখে দেখি । বুলেট কেস এর অবস্থান ঠিক এর নিচেই, যার মাঝে বুলেটের বিষ্ফোরক পদার্থ থাকে । একদম নিচের বৃত্তাকার অংশকে বলা হয় Rim । আর Rim-এর মাঝামাঝি স্থান, যেখানে Hammer দিয়ে আঘাত করা হয় তাকে বলে Primer ।

এবার আমরা জানব কিভাবে কজ করে এই আধুনিক রিভলভার -

১) গুলি করার সময় ট্রিগার টেনে ধরলে Hammer-কে পেছনে ঠেলে দেয় ।


২)Hammer-এর অন্য প্রান্তে সংযোগ থাকে স্প্রিং এর সাথে । Hammer যখন পেছনে যাওয়ার সময় স্প্রিংটি সংকুচিত হতে থাকে ।

৩) ঠিক একই সময়ে রিভলভারের ট্রিগারের সাথে সংযুক্ত একটি Pawl সিলিন্ডারের Ratchet-কে ধাক্কা দিয়ে ঘুরতে সাহায্য করে । Pawl শব্দের আভিধানিক অর্থ খাঁজকাটা চাকা যেন কোনো কিছু পেছনে গড়িয়ে না পরে । এখানে Pawl সিলিন্ডারকে উল্টোদিকে ঘুরতে বাধা দেয় । আর Ratchet হচ্ছে হুকযুক্ত দাঁতালো চাকা যা কেবল একদিকেই ঘুরতে পারে। ছবিতে থেকে দেখা যাচ্ছে, এটি সংযুক্ত আছে সিলিন্ডারের সাথে ।


৪) এর ঠিক একটু সময় পরই আরেকটি Pawl সিলিন্ডারের গায়ে চাপ দিয়ে থামিয়ে দিচ্ছে । তবে থামানোর কাজটি এখানে ইচ্ছেমতো হয় না । কেবল যখন Hammer, বুলেট আর ব্যারেল একই সরলরেখা অবস্থান নিবে ঠিক তখনই এটি থামিয়ে দিবে ।

৫) ট্রিগারটি পুরোপুরি টানা হলে,  Hammer-কে ছেড়ে দেয় ।

৬) Hammer-এর সাথে সংযুক্ত স্প্রিংটি সাথে সাথেই প্রসারিত হয় এবং এটি Hammer-কে সজোরে সামনে ধাক্কা দেয় । ফায়ারিং পিনের মাধ্যমে Hammer-টি  বুলেটের Primer-এ সজোরে আঘাত করে । তখন Primer-টি বিস্ফোরিত হয় এবং বুলেট কেসের মধ্যে থাকা বিষ্ফোরক পদার্থের মাঝে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে দেয় ।


৭) অগ্নিসংযোগের সাথে সাথেই বুলেট কেসের ভেতরের বিষ্ফোরক পদার্থে থেকে বেশ উচ্চ চাপযুক্ত গরম বায়ু উৎপন্ন হয় । এই উচ্চ চাপই বুলেটটিকে ব্যারেলের মধ্য দিয়ে সামনের দিকে যেতে বাধ্য করে । আর এভাবেই একটি বুলেট চেম্বার থেকে ব্যারেল দিয়ে বের হয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করে থাকে ।

তাহলে আজ আমরা জানলাম আধুনিক রিভলভারের কাজ করার পদ্ধতি । কল্পনা করতেও কষ্ট হতে পারে এই কার্যপ্রণালী কিন্তু চখের পলকে ঘটে যায় এই পক্রিয়া । সত্যিই বিস্ময়ের ব্যাপার...
পরবর্তী আর্টিকেল -এ আরও মজার একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে আসব আর তা হচ্ছে বন্দুকের সাইলেঞ্চার এবং এর কার্যপ্রণালী । সাথেই থাকুন ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ