Ad Code

Responsive Advertisement

সময়ের সাথে বাড়ছে সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ | চলে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রণের বাইরে (দেখুন ভিডিও ও আলোচনায়)

সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ

দেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে সাইবার অপরাধ। প্রযুক্তি পণ্যের সহজলভ্যতা এবং প্রাযুক্তিক বিষয়ক সুবিধা ব্যবহার করে অপরাধীরা দিনের পর দিন সাইবার অপরাধ করেই যাচ্ছে ।

সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক দেশে যখন থেকে কম দামে ক্যামেরাযুক্ত মোবাইলফোন সহজলভ্য হয়েছে তখন থেকেই এ সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এ ছাড়া সাইবার অপরাধ সংঘটনে সহযোগী অনুষঙ্গ হিসেবে কমদামের ডিজিটাল ক্যামেরা, ল্যাপটপ , ট্যাব এবং গোপন ক্যামেরাও ব্যবহার করছে সাইবার অপরাধীরা । এ ছাড়াও বিভিন্ন ভিডিও সেয়ারিং পোর্টাল যেমন ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে যে কোনও ধরনের ভিডিও আপলোড করার পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ হওয়ায় এক শ্রেণীর অসাধু বা প্রতারক ব্যবহারকারীরা একান্ত ব্যক্তিগত মূহুর্তের বা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে প্রচার মাধ্যম হিসেবে এগুলোকে ব্যবহার করছে। নীচের ইউটিউব লিংক গুলতে ক্লিক রে দেখে নিন কিভাবে সাইবার অপরাধীরা একান্ত ব্যক্তিগত মূহুর্তের বা ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে বিপদে ফেলছে সাধারণ মানুষকে । ধ্বংস করছে হাজারো নারী, তরুন তরুণীদের জীবন ।

ইউটিউব লিংক ১  | ইউটিউব লিংক ২ | ইউটিউব লিংক ৩ | ইউটিউব লিংক ৪ | ইউটিউব লিংক ৫

সাইবার অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িতদের আসলেই কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। পুরো দুনিয়াই এদের অপরাধের ক্ষেত্র, বিশ্বকে তারা সাইবার অপরাধের একক ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। বিভিন্নভাবে এসব অপরাধী তাদের হীনকর কর্মকান্ড যথেচ্ছাই চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কোটি কোটি লোক। সাইবার অপরাধীরা এসব কর্মকান্ডকে তাদের আয় উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং লাভজনকভাবে পুরো বিশ্বকে এক ভেবে ইন্টারনেটে অপরাধ করেই যাচ্ছে।

সাইবার অপরাধের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হাকিং ।  বিশ্বব্যাপী হ্যাকিং নিয়ে তোলপাড়। হ্যাকিং-এর পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বে বেড়েই চলেছে অনলাইন ক্রাইম বা সাইবার অপরাধ।  সাইবার অপরাধ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র হয়ে পশ্চিম ইউরোপ, পূর্ব ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে এবং এসব অপরাধ মূলত ডিজিটাল অপরাধসমূহ আর্থিকভাবে খুবই লোভনীয় হওয়ার পাশাপাশি এসব অপরাধের দন্ড প্রদান ব্যবস্থাও অপ্রতুল। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগের সাইবার অপরাধের দেশীয় বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন তথ্যপূর্ণ পরিসংখ্যান নেই। তবে তাদের অভিমত এই যে যুক্তরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন অঞ্চলে এ সমস্যা বেড়েই চলেছে। একটা ছোট্ট উদাহরণ হলো প্রতি ১ ঘন্টায় প্রায় ৩০০০০ স্প্যাম মেইল বিভিন্ন ইনবক্স আসে যার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফিশিং এর মাধ্যমে সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধনশীল অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশকে ভাবিয়ে তুলেছে।

বর্তমানে বিশ্বের সাইবার অপরাধ দমনে শুধু নিজ দেশ সচেষ্ট হলেই হবে না দেশী-বিদেশী সরকারি-বেসরকারি সকল খাতের সাথেই সমন্বয়ের মাধ্যমে অপরাধ মোকাবেলা করতে হবে। বাংলাদেশে বাড়ছে সাইবার ক্রাইম এবং সাইবার অপরাধীর সংখ্যা । জানা গেছে, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আইটি ফরেনসিক শাখায় ২০১৩ সালে ৪০টি সাইবার অপরাধ মামলার আলামত পরীক্ষার জন্য জমা হয়। সিআইডি কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছেন, চলতি বছর এ সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হতে পারে। চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল) এ সংখ্যা ২৭ ছাড়িয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাইবার অপরাধের আলামতের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পর্নোগ্রাফি। এর পরের অবস্থানে রয়েছে সুপার ইম্পোজ (একজনের ছবির সঙ্গে অন্যের ছবি জোড়া দেওয়া) এবং ডাটা বা তথ্য চুরি (প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে) । এবং ২০১৪ সালে এই সমস্যা কয়েকশ গুন বেরে গেছে বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা । তবে আসার কথা হছে ,সাইবার অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে শিগগিরই আইন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ সময় তিনি মন্ত্রী দেশের যে কোনো অঞ্চলে সাইবার অপরাধ হতে দেখলে বা জানতে পারলে ০১৭৬৬-৬৭৮৮৮৮ এই নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। সেই সাথে এই ধরনের অপরাধ দমনে সর্বসাধারণকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বর্তমান সময়ের কয়েকটি ক্ষতিকর কুখ্যাত সাইবার ক্রাইম টুল

ফিশিং স্প্যাম
এই টুলের মাধ্যমে সাধারণত ব্যাংক নোটিশ, ট্রাংক নম্বর ইত্যাদি মেইল বা মেসেজের মাধ্যমে প্রেরণ করে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তাদের তথ্য লুট সহ ব্যাংক একাউন্ট হতে অর্থ লুট করা হয়। 

স্টক স্প্যাম
স্টক স্প্যাম বিগত কয়েক বছরে এই স্প্যাম ওয়েব নিয়ে সাইবার অপরাধীরা ব্যাপক তৎপর । এর মাধ্যমে অপরাধীরা গ্রাহকদের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কিনতে অনুপ্রাণিত করে এবং নিজেরা এসব টাকা হাতিয়ে নেয়। ৫২ বছর বয়স্ক এলওন গত এক বছরে চাইনিজ স্টকের নামে প্রায় মিলিয়ন মিলিয়ন স্পাম মেইল পাঠিয়ে গ্রাহকদের ঠকিয়েছে। সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ সংস্থা সমূহ এসব নিয়ে কাজ করলেও লক্ষ লক্ষ অপরাধী এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

ডিডিওএস (ডিস্ট্রিবিউটেড ডেনিয়েল অব সার্ভিস)
ফিশার ও ডাটা চোররা যখন পারে তখন ডাটা চুরি করে। তাদের বহুল প্রচলিত ডিডিওএস এর মাধ্যমে বিভিন্ন সফটওয়্যার লুকিয়ে গ্রহকদের পিসিতে ঢুকিয়ে দেয়া হয় এবং এর মাধ্যমে তথ্য চুরি করে। মে মাসে ১৯ বছরের ফিমিত্রি গুজনার তার এহেন অপকর্মের স্বীকার করেন, সে কিভাবে বিভিন্ন সায়েন্স ওয়েব থেকে তথ্য লুট করে তা স্বীকার করেছে।

সটিংসটিং হলো অপরাধীদের নির্ধারিত ব্যক্তিদের ফোনের একাউন্টে অনুপ্রেবেশ করে ফোন একাউন্টের তথ্য নিয়ে কোম্পানিসমূহের তথ্য ও কোম্পানির কর্মকর্তাদেরও তথ্য চুরি করা হয়। এর মাধ্যমে তারা গ্রাহক, ব্যক্তির ফোন ব্যবহার করে পুলিশকে ফোন দিয়ে বলা হয় যেন সোয়াত টিম পাঠিয়ে তার সমস্যা সমাধান করে এবং এতে আক্রান্ত ব্যক্তি অযথাই হেনস্তা হন।

অভ্যন্তরীণ ডাটা চুরি
অনেকেই ইউএসবির মাধ্যমে বিভিন্নভাবে পরিচিতজনদের তথ্য চুরি করে বিক্রি করে দেয় হ্যাকারদের কাছে। এর ফলে রিবুলো নামের একজন ধরা খেয়ে এখন ৫ বছরের সাজা প্রাপ্ত।

পরিচয় সংক্রান্ত তথ্য চুরি
পরিচয় ও ব্যক্তিগত তথ্য চুরির জন্য বেশি জ্ঞানী হতে হয় না। শুধু আগ্রহী হয়ে একটু গবেষণা করলেই হয়। মূলত জন ডাটাবেজ হতে তথ্য নিয়ে কোন এক ‘লক্ষ্য’ ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য নিয়ে যেকোনো একটি নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর হ্যাকের মাধ্যমে প্রদান করে, ব্যাংকের কাছে আবেদন করে আক্রান্ত ব্যক্তির একাউন্ট হতে অর্থ তুলে লুট করা হয়।

এডওয়্যার
যদিও এডওয়্যার এখন তেমন ব্যাপক নয়, তবুও অপরাধীরা এখন এর মাধ্যমে করছে হাজার হাজার অপরাধ। লুটে নিচ্ছে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার। এডওয়্যারের মাধ্যমে সহজে লক্ষ লক্ষ পিসি’তে ঢুকে সহজেই লক্ষ লক্ষ পিসি হ্যাক করা যায়। এ কাজ করে ৫ বছরের জেল হয়েছে ২১ বছরের বরার্ট মেথিউ-এর। অবশ্য এডওয়্যারে যারা ব্যাপক সংঘবদ্ধ এবং এ কাজ তারা একত্রিতভাবে টার্গেট করে, ফলে ব্যর্থতা কম, বরং ফলপ্রসূ।

নকল সফটওয়্যার
নকল সফটওয়্যার পরিবেশন ও বিক্রি একটি সাধারণ অপরাধ। যা সহজেই করা যায়। প্রতিদিন সফটওয়্যার নকল করার মাধ্যমে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয় এবং এক্ষেত্রে আয়ও অন্যান্য যেকোন অপরাধের চেয়ে বেশি, ঝুঁকিও কম। বিশ্বের বহু দেশে এখন ব্র্যান্ডের আইটেম সমূহ নকল করে বিক্রি হয় এবং সবাই তা ব্যবহারও করছে। 

সাইবার অপরাধীদের ব্যাপ্তি এখন সর্বত্র। ডিজিটাল যুগের সাইবার অপরাধীরা হলো ডিজিটাল অপরাধী, এদের দমন সত্যিই কষ্টসাধ্য হবে। তাই সবার এই বিষয়ে হতে হবে আরও বেসি সচেতন । বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পার্সোনাল তথ্য, ছবি এবং অনন্য সবকিছু আপলোড করার সময় হতে হবে আরও সাবধানী ।। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

5 মন্তব্যসমূহ

এই লিখা সম্পর্কে কোন মতমত থাকলে মন্তব্যে করে জানালে উপকৃত হব। ধন্যবাদ।

Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)