Ad Code

Responsive Advertisement

সুডোকু কি, কেন এবং কিভাবে? সুডোকু মিলাও বদ্ধি বাড়াও ।।

আপনি কি এই ছবিটার গুরুত্ব অনুমান করতে পারেন? ছবিতে যে পেপার এর অংশ টা দেখতে পাচ্ছেন তা হচ্ছে ১৮৯৫ সালের জুলাই মাসের “লা ফ্রান্স” পত্রিকার একটির অংশ । ছবিতে যে পাজলটি  ছিলো প্রায় অনেকাংশেই আধুনিক সুডোকু ও ম্যাজিক স্কয়ারের একটা কম্বিনেশন রূপ । এই পাজলটা আজ থেকে ঠিক ১১৯ বছর আগে জুলাই মাসের এক সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছিলো ।

সুডোকুর ইতিহাসের পরবর্তী পর্বটা এসেছে অনেকটা সময় পার করে । পত্রিকায় ও ম্যাগাজিনে বিশ্বব্যাপী অনেক পাজল প্রকাশের ধারা বজায় থাকলেও ধারণা করা হয় হাওয়ার্ড গার্নস এর হাত ধরেই প্রায় আধুনিক সুডোকুর ধারণার পুনরুৎপত্তি হয়েছে । ইন্ডিয়ানার এই চুয়াত্তর বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত স্থপতি তখন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে ফ্রিল্যান্স পাজল মেক করে অবসর জীবন অতিবাহিত করছিলেন । জীবনের শেষ সময়ে এসে তার নতুন নতুন পাজল বানানোর চেষ্টা যে ব্যর্থ হয় নি তা এখন আমরা সবাই জানি । বিখ্যাত ‘ডেল’ ম্যাগাজিনে ১৯৭৯ সালে হাওয়ার্ড গার্নসের পাজলটি প্রকাশ করা হয় । তখনকার সময়ে পাজলটির নাম ছিলো ‘Number place’ অর্থাৎ‘সংখ্যা বসাও’। মূলত আরো সময় পরে জাপানীজদের হাত ধরে সুডোকু নামটি উঠে এসেছে ।

তবে ইতিহাস এর ব্যাপার যেহেতু, তাই সন্দেহ বা দ্বিমত তো থাকবেই । এক্ষেত্রে যেটি লক্ষ্যনীয় বিষয় ছিলো তা হচ্ছে, ডেল ম্যাগাজিনের যে সকল প্রকাশে ‘Number place’ পাজলটি স্থান পেত কেবল মাত্র সেই সংখ্যাগুলোতেই কন্ট্রিবিউটরের নামের তালিকায় গার্নস সাহেবের নাম থাকতো । তাই ইতিহাসবিদেরা ধারণা করেন হাওয়ার্ড গার্নস-ই এই পাজলের গেম সৃষ্টিকারী । বয়োজ্যেষ্ঠ এই আমেরিকান ভদ্রলোক বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকের ফ্রেঞ্চ পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত পাজলগুলো সম্পর্কে অবগত ছিলেন কিনা সে সম্পর্কে ইতিহাসবিদেরা নিশ্চিত নন । গার্নস ১৯৮৯ সালে মৃত্যু বরণ করেন । বেচারা, মানুষটি মৃত্যুর আগে ঠিক জানতেও পারলেন না যে তার আবিষ্কৃত পাজল একবিংশ শতাব্দীতে এসে পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় বুদ্ধির খেলায় নাম লিখিয়েছে ।


গার্নসের পাজলটির নতুন রূপ ১৯৮৪ সালে জাপানের ‘নাইকোলিস্ট’ পত্রিকায় তাদের এপ্রিল সংখ্যা থেকে চালু করে । মাত্র একবার করে প্রতিটি গ্রিড এবং কলাম ও সারি বরাবর পাজল গেম টিতে ১ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যাগুলো ব্যবহার করতে হয় বলে এই পাজলকে সিঙ্গেল পাজল গেম বলা হতো । ‘অবিবাহিত ব্যক্তি’ নামেও জাপানে এই পাজল গেমটি পরিচিত ছিলো  অর্থাৎ কেবল একটা ইন্টেজার প্রতিটি কলাম ও সারিতে একাকী বসে বলে একে ব্যাচেলর পাজল বলা হত এবং পরবর্তীতে এই নাম থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে মাকি কাজি জাপানী ভাষায় এই পাজলের নামকরণ করেন ‘সুডোকু’। suuji wa dokushin ni kagiru জাপানি পত্রিকায় এই নামে প্রথম এই ধাঁধা ছাপা শুরু হয়,যার অদ্দাক্ষর গুলো নিয়ে SUDOKU নামকরণ করা হয়েছে ।

এখন তো সুডোকু উতপত্তি জিজ্ঞেস করলে নাম শুনেই সবাই দ্রুত উত্তর দেয় এটা নিশ্চিয় জাপান থেকেই এসেছে । তবে সুডোকু গেমটি সবার আগ্রহের মূলে এসেছে মূলত যখন ২০০৪ সাল থেকে দ্যা টাইমস অব লণ্ডন  নিয়মিতভাবে সুডোকু পাজল প্রকাশ শুরু করে । আর এখন তো দ্যা ডেইলি টেলিগ্রাফ, দ্যা ডেইলি মেইল, ইউএসএ টুডে, দ্যা এজ, দ্যা সিডনি মর্নিং হেরাল্ড সহ বিখ্যাত সব সংবাদপত্রে নিয়মিত আয়োজনে স্থান দখল করে নিয়েছে হরেক রকমের সুডোকু ।

সুডোকু নিয়ে মাতামাতিটা বর্তমানে কোন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে সেটা বুঝতে হলে জেনে রাখুন সুডোকু পাজল গেম নিয়ে এখন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপও আয়োজিত হচ্ছে । প্রথমবারের মতো ২০০৬ সাথে ইতালিতে অনুষ্ঠিত হয় ওয়ার্ল্ড সুডোকু চ্যাম্পিয়নশীপ । এরপর থেকেই নিয়মিত প্রতি বছরই বিশ্বের নির্দিষ্ট স্থানে আয়োজিত হচ্ছে ওয়ার্ল্ড সুডোকু চ্যাম্পিয়নশীপ ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ